সরকারের লুটপাটের নীতিই বিদ্যুৎ’ সংকটের জন্য দায়ী
আজ ২৫ জুলাই ২০২২, সোমবার, সন্ধ্যা ৬.৩০ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে জ্বালানী খাতে সরকারের পরিকল্পিত লুটপাট-লুন্ঠনকেন্দ্রীক গণবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে ও সারাদেশে অব্যাহত লোডশেডিং জনভোগান্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও হারিকেন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ডের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফের সঞ্চালনায় সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মেহেদী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অর্থ সম্পাদক আরমানুল হকসহ নেতৃবৃন্দ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে থেকে মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে হাতিরপুল বাজারে এসে শেষ হয়।
সংহতি বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, “দেশজুড়ে বিদ্যুত সংকট ও লোডশেডিংয়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যুৎখাতে সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাট সহায়ক নীতিই বর্তমান সংকট সৃষ্টি করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির বিষয়কে একমাত্র কারণ হিসাবে দেখানো হলেও বাস্তবে সরকারের নীতিই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রযোজনীয় সরবরাহে দেশকে বিদেশ নির্ভর করে তুলেছে।
তিনি আরো বলেন, “ গত ১৩ বছর ধরে জনগণ গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে অর্থের যোগান দিয়ে আসলেও স্থলভাগের গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেক্সকে কাজে লাগানো এব্ং দেশীয় মালিকানা নিশ্চিত রেখে সমুদ্রের গ্যাস উত্তোলনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সরকার ব্যার্থ হয়েছে। একইসাথে পরিবেশ বিধ্বংসী কয়লা বিদ্যুতে বিনিয়োগ বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগের জন্য জনগণের দাবিকেও উপেক্ষা করেছে। ফলে স্বনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনের যথাযথ নীতি গ্রহণ না করা, দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের মহোৎসব এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে অতিরিক্ত মুনাফা ও সরকারের বর্ধিত আয়ের যোগান দেয়ার ক্ষেত্র হিসাবে ব্যবহার করার এই নীতির ফলাফলই পুিঞ্জভ’ত হয়ে আজকের সংকটের জন্ম দিয়েছে।”
সভাপতির বক্তব্যে মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, “বর্তমান সরকারের লুটপাটের নীতিই বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী। রেন্টাল-কুইক রেন্টালের নামে সরকারের যে অবাধ লুটপাট তা অবশ্যকীয়ভাবে এই পরিস্থিতির তৈরী করতো, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সেটাকে শুধু ত্বরাণি¦তই করেছে। সরকার তার কাছের লোকদের পকেট ভরাতে কুইক রেন্টালের নামে কুইক লুটপাটের ব্যবস্থা করেছ্ েএবং এই লুটপাটকে জায়েজ করতে দায়মুক্তি আইন করেছে। আমরা সরাসরি বলতে চাই, দায়মুক্তি আইন করে রক্ষা পাওয়া যাবে না, পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে সমস্ত লুটেরাদের বিচার করা হবে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরিবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানাই।”
তিনি আরো বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী কর্তৃক ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার ঘটনায় প্রশাসন যেভাবে দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা চালিয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে দোষীদের যথাযথ শাস্তির দাবী জানাই এবং সকল ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা যাতে নিবিঘেœ ২৪ ঘন্টা চলাচল করতে পারে সে উদ্যেগ গ্রহণের দাবি জানাই।”
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা রহমান বিথী, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফারহানা মানিক মুনা, কুমিল্লা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস গণি, কেরানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সম্পাদক রাজা আহমেদসহ নেতৃবৃন্দ।
প্রেস রিলিজ
২৫ জুলাই ২০২২